ঢাকা,শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

খুটাখালী লালগোলা হাফেজখানা সড়ক বিচ্ছিন্ন

kotakhaliসেলিম উদ্দিন, ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি ::

চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী লালগোলা হাফেজখানা এলজিইডি সড়ক ভারী বর্ষণ ও পানির প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে সড়কের হাফেজখানা পয়েন্টের বিশাল এলাকা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় প্রতিদিন প্রায় ৯ গ্রামের সাড়ে ৪ হাজার মানুষ চরম ঝুঁকি নিয়ে যাতায়ত করছে। সড়কটি এলাকাবাসীর মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঐ অংশে বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। মঙলবার স্থানীয়দের উদ্দোগে বাশেঁর সাঁকো দিয়ে সড়কে চলাচল উপযোগী করা হয়েছে।

জানাগেছে, ইউনিয়নের উত্তর ফুলছড়ি এলাকার সাড়ে ৪ হাজার মানুষের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম লালগোলা হাফেজখানা সড়ক। টানা ভারী বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে সড়কের হাফেজখানা পয়েন্টে পানিতে বিলীন হয়ে যায়। ফলে ওই এলাকার সাড়ে ৪ হাজার মানুষ জীবনঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত পথ চলছে।

স্থানীয় ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার ওয়াশিম আকরাম বলেন, গত রবিবার থেকে টানা বর্ষণে সড়কটির ১০০ ফুট অংশ বিলীন হয়ে যায়। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয় নিয়মিত। সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ার কারনে জলদাশ পাড়া,উত্তর ফুলছড়ি এলাকার শতশত ঘরবাড়ী পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এলাকার কয়েক হাজার মানুষ কার্যত পানিবন্দী অবস্থায় জীবন যাপন করছেন।

প্রবল বর্ষণে সড়কের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি ও পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কাঁচা বাড়ীঘর ও ফসলি জমি। টানা ভারী বর্ষণে ইউনিয়নের পূর্বপাড়া ও হাফেজখানা সংলগ্ন বিরাট একটি অংশ পানির প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গন এলাকা দিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করায় মাইজপাড়া, হাফেজখানা,দক্ষিন পাড়া, জলদাশ পাড়া,উত্তর ফুলছড়ি ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বৃষ্টিতে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ সড়কের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে সড়কে ছোট-বড় গর্ত ও খানা খন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। এতে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগে জনভোগান্তি চরমে উঠেছে। স্থানীয়রা স্ব-উদ্যোগে কিছু কিছু সড়ক সংস্কারে নামলেও বৃষ্টির পানিতে তা ভেসে গিয়ে পুনরায় বেহাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়া জনসাধারণ বেহাল পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থায়ীভাবে সড়ক সংস্কারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।

সরেজমিন মঙলবার ভাঙ্গন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড তথা চেয়ারম্যান পাড়া সিকদার পাড়া, কাঠালিয়া পাহাড়, কাচারি পাহাড়, গুরুস্থান পাহাড়, খাসঘোনা, কচিকাটা, লুইঘোনা, গরুলুটা পাড়াসহ প্রায় ৯ গ্রামের সাড়ে ৪ হাজার মানুষের একমাত্র চলাচল রাস্তাটি ভেঙ্গে যাওয়ায় জনদূর্ভোগ বাড়ছে। অন্যদিকে পশ্চিম বিল রন্জু ঘোনার প্রায় সাড়ে ৩শ কানি ধানি জমির চলিত মৌসুমের চাষ ভেস্তে গেছে। তলিয়ে গেছে ৫টি চিংড়ি ঘের। ক্ষয়ক্ষতি প্রায় কোটি টাকা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে অনেক বাড়ি-ঘর পানিবন্দি রয়েছে। রয়েছে এসব গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।

৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সাধারন সম্পাদক নাজেম উদ্দিন হেলালী জানান, রাস্তাটি এলাকার জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রতি বছর বর্ষা এলেই এটি পাহাড়ি ঢলে ভেঙ্গে যায়। জনস্বার্থ বিবেচনায় সড়কটি দ্রুত সংস্কারে কক্সবাজার এলজিইডির হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

স্থানীয়রা হাফেজখানা এলাকার বেড়িবাধের ক্ষতিগ্রস্থ অংশটি মেরামত করার জন্য সংশিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবী জানান।

এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন খুটাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুর রহমান। পরিদর্শনকালে তিনি জানান, উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় আমরা সড়কটি সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ চলছে।

পাঠকের মতামত: